অনলাইন ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে সোমবার তরুণদের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার পর অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এএফপি।কাঠমান্ডু উপত্যকা পুলিশের মুখপাত্র শেখর খানাল এএফপিকে বলেছেন, ‘দুঃখজনকভাবে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।পুলিশসহ প্রায় ১০০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।’দ্য হিমালয়ান এর প্রতিবেদনে বলা হয়, আহতদের সংখ্যা এখনও অজানা, কারণ রোগীর ভিড়ে নির্ধারণ করা কঠিন।সিভিল হসপিটাল ও ট্রমা সেন্টারসহ কিছু হাসপাতাল রোগী ধারণে সমস্যায় পড়ছে ও তাদের অন্য হাসপাতালগুলোতে পাঠানো শুরু করেছে। প্রশাসন জানিয়েছে, মৃত ও অনেক আহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হয়নি।বিবিসি জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঠমাণ্ডুর বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।বিক্ষোভকারীরা নিউ বানেশ্বরের ফেডারেল পার্লামেন্ট কমপ্লেক্সেও হামলা চালিয়েছে। এ সময় সেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া গেছে। বিকেল সোয়া চারটা পর্যন্ত ওই এলাকায় পরিস্থিতি অশান্ত রয়েছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে এবং নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করলে তাদের ওপর বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়েছে নিরাপত্তা কর্মীরা।সরকারের মুখপাত্র এবং যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “সরকার কিছু একটা করবে।”
দেশটিতে ২৬ টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাঠমান্ডুসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ করছে জেনজিরা।তরুণ প্রজন্মের এই বিক্ষোভকারীরা “জেন জি” হিসেবে পরিচিত।
সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর দীপক পাউডেল জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ওই হাসপাতালেই একশ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল।তাদের অনেকেই রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।কাঠমান্ডু ভ্যালি পুলিশ অফিসের মুখপাত্র শেখর খানাল বলেছেন,” কতজন আহত হয়েছেন তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারী উভয় পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন।”
সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষের পর কাঠমান্ডুর স্থানীয় প্রশাসন সংসদ ভবনের আশেপাশের এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে কারফিউ জারি করেছে।দেশের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র সিংহ দরবারের কাছে মাইতিঘরে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা সকালে নতুন বানেশ্বরের সংসদ ভবনের দিকে অগ্রসর হয়।সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ বল প্রয়োগ করে এবং স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকায় কারফিউ জারি করে। পরে অন্যান্য স্থানেও কারফিউ জারি করা হয়।বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবন কমপ্লেক্সে প্রবেশ করলে আজ সোমবার বিকেলে নির্ধারিত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বুধবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।কারফিউ ঘোষণার পর কাঠমান্ডুর রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজারাম বাসনেত বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন আইন- ২০২৮ এর বিধান অনুসারে জেলা নিরাপত্তা কমিটির সুপারিশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
