মঙ্গলবার, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
spot_img

পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের উচ্ছেদে বড় অভিযান কাল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের রেলওয়ের মালিকানাধীন নগরীর পাহাড়গুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসরত লোকজনকে সরানো হচ্ছে। চলমান বর্ষায় ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদে এ অভিযানে নামছে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। সপ্তাহব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযানে পাহাড়গুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসরত লোকজনকে সরানোর পাশাপাশি রেলওয়ের ভূমিতে অবৈধভাবে তৈরি করা স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করা ব্যক্তি কিংবা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীর কোন তালিকা রেলওয়ের কাছে নেই। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমেই এই তালিকা হওয়া উচিত বলে মনে করেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা বলেন, এই কাজে আমাদের কোন বাজেট নেই। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির আছে। তারা চাইলে এই তালিকা করতে পারে। এতে কাজ করা সহজ হবে।
সূত্র জানায়, গত ২৪ জুন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় রেলওয়ের মালিকানাধীন পাহাড় বা ভূমিতে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসরত লোকজনকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয় ওই সভায়।এরই ধারাবাহিকতায় নিজেদের মালিকানাধীন পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণদের সরাতে বড় অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। কাল রোববার সকাল ১০টায় নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশন কলোনি সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলবে ওইদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরদিন সোমবার সকাল ১০টা থেকে নগরীর চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকার পাহাড় ও পরিবেশ অধিদপ্তর সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। এসব এলাকায় উচ্ছেদ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এরপর মঙ্গলবার সকালে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে টাইগারপাস এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে। চলবে ওইদিন বিকেল পর্যন্ত।
এদিকে পবিত্র আশুরার বন্ধের কারণে বুধবার অভিযানে বিরতি দিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার ফের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। ওইদিন সকাল ১০টায় উচ্ছেদ অভিযান চলবে নগরীর মতিঝর্ণা বাটালি পাহাড়ের পাদদেশে। সবমিলিয়ে সপ্তাহব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযানে নগরীর ৬টি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরিয়ে দেয়া হবে।
তবে শুধু উচ্ছেদ করেই পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের সরানো কঠিন বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলছেন, উচ্ছেদের সঙ্গে যারা এসব স্থাপনা তৈরি করছে, ভাড়া দিচ্ছে, সেখানে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। নাহয় বছর বছর এই ‘উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা’ চলতে থাকবে। স্থায়ী কোন সুফল আসবে না।
অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী বলেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে একজন মানুষও যেন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করতে না পারে- অভিযানে সেটি নিশ্চিত করা হবে। রেলওয়ের পাহাড়ে প্রাণহানি শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই আমরা।
অবৈধ স্থাপনা তৈরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কেবল উচ্ছেদ অভিযানের সমালোচনা করেছেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও টিআইবি চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, রেলওয়ের পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরিতে সংস্থাটির কিছু কর্মীই জড়িত। উচ্ছেদ অভিযান শুরুর আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।তিনি বলেন, বর্ষা এলেই প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালায়। এরপর সারাবছর ঘুমিয়ে থাকে। অবৈধ স্থাপনা তৈরি থামাতে না পারলে উচ্ছেদ করে লাভ হবে না। কেবল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কষ্টই বাড়বে। তাই পাহাড়ে প্রাণহানি শূন্যে নামিয়ে আনতে যারা সেখানে অবৈধভাবে স্থাপনা করছে, তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তালিকা ধরে ব্যবস্থা নিলে সুফল আসবে।

 

সর্বশেষ

যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত সঞ্জয় কুমার সাহা

পূর্বকাল ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক...

আ.লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হলেন বিধান রক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক...

সাতকানিয়ার বাজালিয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা

সাতকানিয়া প্রতিনিধি : দীর্ঘ অর্ধ যুগের বেশি সময় পর...

প্রগতিশীল নাগরিক সমাজ -এর সদস্য সংগ্রহ সভা

পূর্বকাল ডেস্ক: মোহরা ওয়ার্ড, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড, সরাইপাড়া ওয়ার্ড...

সাতকানিয়ায় ছিটুয়াপাড়া ফ্রেন্ডশীপ ফুটবল টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু

সাতকানিয়া প্রতিনিধি: সাতকানিয়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডস্থ ছিটুয়াপাড়া ফ্রেন্ডশীপ...
spot_img