নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের কারফিউতে চট্টগ্রাম নগরীতে রিকশা, টেম্পো ও সিএনজি ট্যাক্সি চলাচল কম দেখা গেছে। বুধবার সরোজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। তবে প্রায় দিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এমনকি কারফিউ শিথিলের সময়েও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে এসব পরিবহনের চালকরা।
এদিকে নিউমার্কেট এলাকা থেকে হালিশহর পর্যন্ত টেম্পো চালকরা প্রায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দাবি করছে। এসময় এক টেম্পো যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমনিতেই ভাড়া বেশি নিচ্ছে। তার উপর যেখানে পুলিশ বা আর্মির চেক পোস্ট থাকে- সেখানে নামিয়ে দেয় চালকরা। তিনি বলেন, এই কয়েকদিন রিকশা করে অফিসে যাওয়া আসা করছি। আজ দেখছি সকাল থেকে টেম্পো চলছে।
কালুরঘাট থেকে চান্দগাঁও এলাকায় আসা এক পোশাককর্মী বলেন, কারখানা আজ থেকে খুলেছে। তবে দিগুণ ভাড়া দিয়ে যাওয়া-আসা করলে চলবে কি করে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তাও পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না। তবে এই কয়েক দিন বাসায় বেকার সময় কাটানো বিরক্তিকর মনে হয়েছে, এখন কাজে যোগদান করবো বলে আনন্দ লাগছে।
বিকেলে ২ নং গেট এলাকার হৃদয় নামের এক যাত্রী জানান, আমি পতেঙ্গা যাওয়ার জন্য কয়েকটি সিএনজি ট্যাক্সি চালকদের সাথে কথা বলেছি। তারা প্রায় এক থেকে দেড়শ টাকা বেশি ভাড়া দাবি করছে।
এসময় শাহীন নামের এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই সকাল ১০টায় ট্যাক্সি নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে ৫৭০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। এখন বিকেল পাঁচটা। জানি না আর ভাড়া পাবো কিনা। কিন্ত আমাকে ১২০০ টাকা মালিককে জমা দিতে হবে। আমি এখনও নিজের বেতনও তুলতে পারিনি। রাস্তায় লোকজন কম, ভাড়াও কম। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তো বেশি ভাড়া দাবি করি না।
এর আগে সকালে বহদ্দারহাট থেকে আমতল পর্যন্ত টেম্পোগুলো ওঠা-নামার ভাড়া পাঁচ টাকার স্থলে দশ টাকা আর দশ টাকা ভাড়ার স্থলে ১৫ টাকা আদায় করছে। আন্দরকিল্লা এলাকার চকবাজারগামী এক রিকশা যাত্রী রফিক জানান, আন্দরকিল্লা থেকে চকবাজার রিকশা ভাড়া চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা, সেখানে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাবি করছে চালকরা। এসময় বেশি ভাড়া আদায় করার বিষয়ে জানতে চাইলে কালাম নামের এক রিকশা চালক জানান, ভাই এখন দুপুর ২টা। সকাল থেকে ভাড়া পেয়েছি মাত্র ২০০ টাকা। এরমধ্যে মালিককে রিকশা ভাড়া দিতে হবে ১৩০ টাকা। একটু বেশি ভাড়া না নিলে চলব কি করে? কারফিউ শিথিলের সময় ছাড়া রাস্তায় লোকজন কমে যায়। এমনিতে আমাদের দৈনিক আয় হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, এখন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া পাচ্ছি না। শাহ আমানত সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বশিরুজ্জামান চত্বর থেকে বহদ্দারহাট-মুরাদপুর পর্যন্ত টেম্পো ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা বাড়তি নিয়ে ৩৫ টাকা দাবি করছে চালকরা। তবে বাড়তি ভাড়া না দিয়ে বেশির ভাগ মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম অটো টেম্পো অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে প্রায় সকল রুটে বেশি ভাড়া আদায় হচ্ছে এমনটা আমি নিজেও শুনেছি। তবে নায্য ভাড়া নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তারপরও কিছু কিছু চালক এই নির্দেশনা অমান্য করে বেশি।