নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পাড়ে সিসি ব্লক দ্বারা নির্মিত ১৫৭ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন ধরেছে। যার ফলে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য প্রজনন ও নদীর জীববৈচিত্র্য। নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ড্রেজার ও ইঞ্জিন চালিত নৌকার মাধ্যমে কৌশলে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। একটি মহল এই কাজের সাথে সংপৃক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির এক সভায় সভাপতি সালাউদ্দীন আলী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কিছু ব্যাক্তি কাউকে তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে। হালদা নদীর বিভিন্ন অংশে বালু উত্তোলন কারণে হালদার নানামুখী ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের ইউনিয়নে হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়েছিল। জায়গাগুলো হলো- নাঙ্গলমোড়া বাজার, চৈতারো ঘাটা ও চাটাল গাছতল (চাইলদা তল)।এলাকাই হালদার বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করছে। আমাদের দল বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ বালু উত্তোলন করতে পারবে নাহ বা করা যাবে নাহ।
সালাউদ্দীন আলী আরো বলেন, যারা হালদার ক্ষতিসাধন করে বালুর ব্যবসা করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যে বা যারাই জড়িত থাকুক তাকে আইনের সর্বোচ্চ আওতায় আনা হবে। এটার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা হবে। বালু উত্তোলন করার ফলে হুমকির মুখে পড়ে গেছে নদীর পাড়ে সিসি ব্লক দ্বারা নির্মিত ১৫৭ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ। অবাধে বালু লুট চলতে থাকলে অচিরেই শতকোটি টাকার সেই বাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে সালাউদ্দীন আলী, এতে করে ওইসব স্থানে আবারও বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ার আশঙ্কা করছি। বর্তমানে জলবায়ুর পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট ধ্বংসত্মাক কর্মকান্ডের প্রভাবে হালদার পরিবেশ ও প্রতিবেশ চরমভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। হালদা নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে যত্রতত্র অবৈধভাবে প্রতিনিয়ত ব্যাপক হারে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে হালদা নদীর গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। বালু উত্তোলন হালদার জন্য আরও এক হুমকি। প্রতিদিন এই অঞ্চল থেকে প্রায় দেড় লাখ বর্গফুট বালু তোলা হয়। বালু তোলার কারণে নদীর তলদেশের মাটির গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, শব্দ দূষণ বাড়ছে, পানি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে, সূর্যের আলো ঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না, বালুর সঙ্গে সঙ্গে জলজ প্রাণীও উঠে আসছে।
তিনি বলেন, নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে ছোট বড় যত নদী আছে, তার মধ্যে গুণে অনন্য নদীটির নাম হালদা। হালদা অপার এক সম্ভাবনার, ভালোবাসার, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ খুলে দেওয়া প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়ের নাম। হালদা পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার ভাটার নদী ও এশিয়ার প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং সেই নিষিক্ত ডিম সরাসরি সংগ্রহ করা হয়।এই নদী কেবল প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননের জন্যই ঐতিহ্যের অধিকারী নয়, ইউনেস্কোর শর্ত অনুসারে এটি বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের যোগ্যতা রাখে।
নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব সালাউদ্দীন আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, নাঙ্গল মোড়া ইউনিয়ন আহবায়ক কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক গাজী মোরশেদ উল আলম, হাটহাজরী উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মোস্তাফা আলম মাসুম, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সম্মানিত উপদেষ্টা হাফেজ মৌলনা ফরিদ, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাবউদ্দিন, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শফিউল আলম বাবু, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার আক্তার, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আকতার হোসেন ভুট্টু, ছিপাতলী ইউনিয়ন বিএনপি সদস্য সচিব কামাল উদ্দিন কামাল, গুমানমর্দন ইউনিয়ন বিএনপি সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান, হাটহাজারী উপজেলা যুবদল এর অন্যতম সংগঠক ও গুমানমর্দন যুবদল এর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মোহাম্মদ সোলমান মেম্বার, মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম, মোহাম্মদ আবু তৈয়ব মিয়া, শাহাজান সিরাজ, নাংগলমোড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নুরুল আমিন, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ নঈম উদ্দিন প্রমূখ।