নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড এবং আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় এ হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিরাজাম মুনীরা এ রায় দেন। একইসাথে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একই রায়ে খালাস পেয়েছেন আরেক আসামি। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ওই যুবক হলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ড রাজানগর এলাকার নেজাম উদ্দিন (৩০)। যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামি হলেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চর আইচা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিম (৪৫)।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলায় আদালত ১১ জনের স্বাক্ষ্য নিয়েছেন। তিন আসামির একজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন এবং অন্যজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের সময় নেজাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামি আবদুল হালিম পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদ বোস্তামী থানার মুরাদনগর এলাকায় চতুর্থ তলার একটি বাসা থেকে ২০১৯ সালের ১৩ মে নগরের রেবেকা সুলতান মনি নামে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ভবনের দারোয়ান আবু ছিদ্দিক রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ২০ মে নেজামকে গ্রেফতার করে।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নেজাম জানায়, মুরাদনগরের ওই বাসায় আসামি আবদুল হালিম পতিতার ব্যবসা করতেন। সেখানে মাঝেমধ্যে নেজাম যেতেন। খুনের শিকার মনি হালিম থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা পেতেন। সে টাকা দিতে হালিমকে চাপ দিতে থাকেন মনি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মনিকে খুন করার জন্য নেজামকে জানান হালিম। ওই বছরের ১১ মে নেজাম মনিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন এবং বাসা তালা মেরে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় তৎকালীন বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০২২ সালের ১ আগস্ট তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেয় আদালত। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এ রায় দেন।