মীরসরাই প্রতিনিধিঃ শ্রমিকরা হলেন এক দেশের প্রাণ, জীবনীশক্তি। তাদের ছাড়া কোনো দেশ নিজেদের শিল্পে উন্নতি করতে পারছে এমন নজীর বিশ্বব্যাপী কোথাও নেই। অতএব প্রিয় শ্রমিক ভাইয়েরা আপনাদের সকলকেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি ও শিল্পোন্নত দেশ গড়ার কাজে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে হাতে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে – মীরসরাইয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত শ্রমিক সম্মেলনে বক্তারা এভাবেই শ্রমিক ভাইদের এবং দায়িত্বশীল ও কর্মীদের কাজে উদ্ভুদ্ধ করেন।
৮নভেম্বর, ২০২৪ রোজ শুক্রবার মীরসরাই মডেল উচ্চ বিদ্যালয় আয়োজিত উক্ত সম্মেলনে সকাল ৯:০০ঘটিকা থেকেই শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সকল শ্রমিকরা দলেদলে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে উপস্থিত হয়। মীরসরাই উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি নূরুল ইসলাম চৌধুরী এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি মো. লুৎফর রহমান। সকাল ৯:৩০ঘটিকা হতে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে উপজেলা সেক্রেটারী মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় এবং উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুন এর দারসুল কুরআন মাধ্যমে আরম্ভ হওয়া উক্ত অনুষ্ঠানে উদ্ভোধনী বক্তব্য রাখেন উপজেলা সভাপতি নূরুল ইসলাম টিটু।
এসময় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ মেহমান হিসাবে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সেক্রেটারি ইউছুফ বিন আবুবকর, আদর্শ শিক্ষক পরিষদ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ নূরুন নবী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মীরসরাই উপজেলা আমীর মাওলানা নূরুল কবীর, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জোরারগঞ্জ থানার সভাপতি মো. আবু তাহের, জামায়াতে ইসলামী মীরসরাই পৌরসভা আমীর মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মীরসরাই শহর সাথী শাখা শিবির সভাপতি মো. শাকিব, ইসলামী ছাত্র শিবিরের চবি শিক্ষা সম্পাদক আফনান প্রমুখ।
মীরসরাই উপজেলা শাখা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সকল শ্রমিক, জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল ও কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে বক্তারা তাদের বক্তব্যে এদেশে বারংবার কীভাবে শ্রমিকেরা লাঞ্চিত ও বঞ্চিত হয়েছে তা তুলে ধরেন। এসময় বক্তারা বলেন, বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরিতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে নিজের দেশের লোকদের বেকারত্বের এক বিরাট বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলো গত ফ্যাসিবাদী সরকার। একটি নির্দিষ্ট দেশের মন ভরাতে গিয়ে তারা গত ১৭টি বছর এদেশের শ্রমিক সহ আপামর জনসাধারণের উপর নির্যাতন, নিপিড়ন, নিষ্পেষণের যে স্ট্রিম রোলার চালিয়েছে তা বলে শেষ করার নয়। তারা বিভিন্ন স্থানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে গায়ের জোরে শ্রমিকদের শ্রম নিয়ে সময়মত ও উপযুক্ত কোনো পারিশ্রমিক পর্যন্ত দেয়নি এমন প্রমাণও ভুরিভুরি। এই ফ্যাসিবাদ সঠিকভাবে বেতন বোনাস না দেয়ার জন্য ঈদ আসলে বিভিন্ন জায়গায় মীল-ফ্যাক্টরি ও গোডাউনে আগুন নাটকের মাধ্যমে একদিকে যেমন কোটি-কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে, অন্যদিকে ঠিক তেমনিভাবেই বঞ্চিত করেছে আমাদের শ্রমিক ভাইদের। গত ৫আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে ঐখন যে পরিবেশ আসছে, আমাদের শ্রমিক ভাইদের নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার সময়। আপনারা সকলেই যার যার জায়গা থেকে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজ কর্মস্থলে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে কাজ করে যাবেন। আর বাংলাদেশের বুকে শ্রমিক সহ যে কারো অধিকার পূর্ণাঙ্গ আদায়ে একমাত্র বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আপনারা আপনাদের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতি কাজে অংশ নিয়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে কাজ করে যাবেন। সব সময় প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিবিধান করার চেষ্টা করবেন।
পরিশেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে জুমা পূর্ব মুহূর্তে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।