নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) স্বল্পমূল্যের সামুদ্রিক মাছ ব্যবহার করে উচ্চমানের সুরিমিভিত্তিক পণ্য উৎপাদন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিতে হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১৬ ও ১৮ নভেম্বর এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সোমবার সিভাসু’র প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।
সিভাসু’র ফিশিং ও পোস্ট-হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ-আল-নাহিদ এবং পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুদ্দীন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভাসু’র কোষাধ্যক্ষ ও প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো: কামাল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের সহকারী প্রধান গবেষক ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক চয়নিকা পন্ডিত এবং মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তর, চট্টগ্রামের উপপরিচালক ড. মঈন উদ্দিন আহমদ ও পরিদর্শক প্রণব কুমার দাশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, সমুদ্র, নদী আর পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম। আর সমুদ্রে রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমুদ্রসম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। অবস্থানগত কারণে সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে সিভাসু’র গবেষকদের। তিনি সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণে ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন গবেষণা প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য সিভাসু’র ফিশারিজ অনুষদের গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান। সুরিমিভিত্তিক বিভিন্ন উচ্চমানের পণ্য বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো: কামাল বলেন, স্বল্পমূল্যের সামুদ্রিক মাছ থেকে সুরিমি প্রস্তুতির প্রক্রিয়া, এর গুণগত মান বজায় রাখা এবং তা থেকে পণ্য উৎপাদনের নানা কৌশল শেখানোর উদ্দেশ্যেই আজকের কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘উক্ত প্রকল্পের অধীনে আমরা ইতিমধ্যে সামুদ্রিক পোয়া মাছ থেকে প্রস্তুতকৃত সুরিমি দিয়ে সুস্বাদু ও প্রোটিনসমৃদ্ধ ফিশ বল, ফিশ কেক, ফিশ সমুচা ও ফিশ রোল তৈরি করেছি। সুরিমিভিত্তিক এই পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে টেকসই এবং দেশে-বিদেশে বাজারজাত করা গেলে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’ দুই দিনের এই কর্মশালায় ইন্ডাস্ট্রি প্রসেসরস এবং বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এবং উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে টেকসই উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্প, মৎস্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।