নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেসরকারি তিনটি ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। হারানো চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে এ বিক্ষেভে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি সংকটে পড়ে অভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহনও। রোববার রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভকারীরা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা।
এসময় বিক্ষোভকারীরা ‘বৈষম্যের ঠাঁই নাই; আমার তোমার বাংলায়’, ‘লড়তে হলে লড়বো; চাকরি নিয়ে ফিরবো’, ‘এক দফা এক দাবি; চাকরি চাই চাকরি চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
সকাল থেকে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের অবরোধের ফলে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহন কক্সবাজারে যেতে পারছে না। কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা গাড়িও চট্টগ্রাম নগরে প্রবেশ করতে পারছে না। এসময় বেশ কয়েকবার আন্দোলনরতদের সাথে শ্রমিক এবং স্থানীয়দের হাতাহাতি হয়। হঠাৎ আন্দোলনে বিপাকে পড়ে চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা। অনেকেই হেঁটে হেঁটে শাহ আমানত সেতু পার হয়।
বিক্ষোভকারীদের দাবি অনলাইনে আবেদন করে, সঠিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরি হয়েছে। এখন নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রশ্ন তুলে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ডিসি এবং প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দাবি না মানলে বৃহৎ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এসআইবিএল থেকে চাকরিচ্যুত হওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, গত তিন মাস সংকট থাকাকালে আমরা ব্যাংকে অমানবিক কষ্ট করেছি, যাতে ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ায়। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করেছি। অথচ, এক নোটিশে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই। আমাদের প্রত্যেকের পরিবার রয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ দেশের সব-বিপদে আপদে এগিয়ে থাকে; এখন সরকারের কি চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নাই!
এদিকে, মহাসড়ক অবরোধ কারণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহন কক্সবাজারে এবং কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো চট্টগ্রাম নগরে প্রবেশ করতে পারছে না। একইসঙ্গে সংকটে পড়েছে অভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহনও।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন,ব্যাংক থেকে চাকরি হারানো কর্মকর্তারা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে অবরোধ করছেন। অবরোধের কারণে দু’প্রান্তে যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। তাদের সরিয়ে দেওার হয়েছে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেসরকারি শরিয়াহভিত্তিক বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদ এস আলমমুক্ত করা হয়। আর পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ বদল হওয়ার পর গত কয়েক মাসে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্তত ১ হাজার ২০০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।