মো. জাহেদ উল্ল্যাহ চৌধুরী: চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর ও কাট্টলী উপকূলে শীতকালীন সবজির আবাদ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রতিবারের মতো এবারও বেশির ভাগ জমিতেই চাষ হচ্ছে টমেটো। এছাড়া পুঁইশাক, কলমি শাক, লাল শাক, ধনেপাতা, ডাঁটা, পালং শাক, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ হচ্ছে।
তবে এই উপকূলে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে আলু চাষ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত ৯ প্রজাতির আলু চাষ করছেন স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ ইলিয়াছ। লবণাক্ত জমির কারণে এর আগে উপকূলে কখনও আলু চাষের ঝুঁকি নেননি কৃষকরা। পরীক্ষামূলক এই চাষ সফল হলে উপকূলে শীতকালীন সবজি হিসেবে নতুন করে যোগ হবে আলু উৎপাদন।
এদিকে হঠাৎ করে আলু চাষের ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষক মো. ইলিয়াছ বলেন, গত ২১ নভেম্বর খুলশী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ৯ প্রজাতির ৯০ কেজি আলুর বীজ দেয়া হয়েছে। বীজ হাতে পেয়ে জমি তৈরি করে বপন শুরু করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, দেশের অন্য এলাকার তুলনায় এখানে আলুর উৎপাদন কম হয়। গত কয়েকবছর ধরে ভাল বীজ ও উন্নত সারের অভাবে শীতকালীন সবজি আবাদ করে তেমন একটা সফলতা পাইনি। তাই পরীক্ষামূলক আলু চাষ করছি। প্রতিটি চারা থেকে দেড়কেজি ফসল পেলেই আগামী বছর থেকে নিয়মিত আলুর চাষ শুরু করবো।
জানা গেছে, এখানে বিভিন্ন প্রকারের শাক বাজারজাতও করছেন কৃষকরা। তবে ব্যতিক্রম দেখা গেল উত্তর কাট্টলী এলাকায়। অন্য সবজির সাথে প্রায় ৪০ শতক জমিতে আলু চাষ করছেন মো. ইলিয়াছ। এরমধ্যে অর্ধেক জমিতে আলুর বীজ বপন করা হয়েছে। বাকি জমিতে শ্রমিকদের নিয়ে বীজ রোপণ করছেন তিনি। লবণাক্ত মাটির কারণে এর আগে এখানকার কৃষকরা আলু চাষে আগ্রহী ছিলেন না।
মেট্টোপলিটন কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার সুভাষ চন্দ্র দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম উপকূলে এর আগে আলুর চাষ হয়নি। লবণাক্ত জমির কারণে এখানে আলুর ফলন ভালো হয় না। পরীক্ষামূলক চাষে যদি তিনি সফল হন তাহলে ভবিষ্যতে আলু চাষে আগ্রহ বাড়বে এ এলাকার কৃষকদের।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঢাকা প্রধান কেন্দ্র থেকে এসব বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। ইলিয়াছ আদর্শ ও পরীক্ষিত একজন কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমাদের সাথে কাজ করে আসছেন। আর তাই পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য নগরীর মধ্যে একমাত্র কৃষক হিসেবে তাকেই এসব বীজ দেয়া হয়েছে। পরীক্ষায় সফল হলে ভবিষ্যতে উপকূলে আলু চাষে আগ্রহ বাড়বে কৃষকদের।