সন্ন্যাসী পথ –
ফেলে আসা পথ জানিনা কতদূর
জানি হয়েছি সন্ন্যাসী
যেতে হবে দুরবহুদূর।
জানি আর ফিরবো না বাড়ি
সকল মায়ার সাথে দিয়েছি আড়ি
জানিনা আমের শাখে দোলনাটা কি আজও বাঁধা আছে –
জানিনা নাগিনীর ফনা দেখে বর্ষার রাতে ব্যাঙের ছানা কেমন নাচন নাচে।
জানিনা কাঠবিড়ালি আজও কি হানা দেয় জৌষ্টের মধু ফলে-
জানিনা ফাল্গুনের হৃদয় জুড়ে আজি কিসের আগুন জ্বলে।
জানিনা পুকুর জলে নাইতে গিয়ে আজি তুমি কাহারি গান গাও –
আজও কি তুমি ঝিলের ধারে রাতের আঁধারে নাগমণি খুজতে যাও ।
জানিনা তুমি কি আজও চুলে বেণী বাঁধ –
কপালে নীল টিপ আর ঠোঁট লাল করে বৈশাখী সাজে সাজো।
জানিনা খেলা শেষে বধু সেজে
বেঁধেছ ঘর তুমি কোন গাঁয়ে
কাহারো পূজারও ফুল তুমি সফিতেছ কার পায়ে-
জানিনা হয়েছিল কি তোমার এতটুকু লজ্জা-
আমার বুকের পাজরে সাজাতে তোমাদের ফুলসজ্জা।
জানিনা কোথায় সম্পর্কটা থেমে গেল ——
কখন নতুন সম্পর্কে জড়ালে—-
কোন ভুলে কোন মোহে
আমার পূজার শত ফুল
দু’পায়ে মাড়ালে।
জানিনা পাবে কিনা ঠিকানা
যদিও বা বৃহস্পতি অঙ্গে তোমার সঙ্গে সাপেবর….
রঙিন স্বপ্নের চাদরে ঢেকে
আমায় করেছ পর।
বাঁধন ছিড়ে প্রিয়া যদি চড়ে চলে যায় ছয় বেহারার কাঁদে –
সংসার মায়া কেমন করে আর প্রেমিকের মন বাঁধে ।
সেদিন থেকে অজানা পথে দিয়েছি আমি পাড়ি-
জগত সংসার সকল মায়ার সাথে দিয়েছি কঠিন আড়ি।
জানিনা সামনের সন্ন্যাসী পথে
আছে কত চোরাবালি কতহুর
পথের পেছনে পথ পড়েছে –
তুমি- আমি আজ
দূর বহুদূর।।
ধর্ষিতা বঙ্গ
————
বঙ্গনারীরা সেজেছে আজ রণাঙ্গনের সাজ
কপালে পড়েছে ভাজ
করিতেছে পুরুষের কাজ
জয় করিতে সিংহাসন
মাথায় পড়িতে রাজ তাজ
ও’হে অত্যাচারী নীতি ভ্রষ্ট নষ্ট কাপুরুষ –
অচেতন দলিত পুরুষ, তোদের কি নাহি লাজ
বঙ্গনারীরা জেগেছে করিতে বীরপুরুষের কাজ ।
কুমারী দেশ মাতৃকারে তোমরা যারা
শুরার পেয়ালায় ঢেলে দাবার চালচালো –
মুক্তকুমারী বঙ্গরে ধর্ষীতে বারে বারে নিভিয়েছো আলো
তোমাদের হিসাব কষিতে বঙ্গনারীরা রণাঙ্গনে সমবেত আজ –
নিপীড়িত নারীরা ভাঙ্গিয়া গড়িবে পুরুষ ধর্ষিত বিশ্ব সমাজ।।
অপূর্ণ প্রেম
————
চায়ের কাপটা রেখে যা তো ছেরি, হাতের বইটা রেখে যা
কবিতাটা পরে পড়ি
পকেটে নাই কানা কড়ি।
মন খারাপ করিসনে
সকালে যে কবিতা কসকস – বিকেলে তাহাতে জমিবে রসগোল্লার রস।
বিকেলে আজ ফিরব তাড়াতাড়ি-
আশিস পড়ে সেদিনের সেই লাল শাড়ি।
বলতো চেরি তুই কবিতার কি বুঝিস
যখনই বারান্দায় বসি, উঠান ভেঙ্গে দৌড়ে আসিস।
চা না হয় খাওয়াস-
আমার মুখে কবিতা শুনে কি পাস।
মন্দ লাগে না আমার
তোরে কবিতা শুধায়ে পাই তোর দোপাট্টার সুবাস।
আমিও তোর অপেক্ষায় থাকি
সকাল বিকাল পথপানে দৃষ্টি রাখি।
তোর ডাঙ্গর ডাঙ্গর হেঁয়ালি চোখ দুটো কি চায় কবিতায়-
আমি তা বুঝি।
তাইতো রোজ চাকরি খুঁজি-
চাকরিটা এবার আমি ধরব-
নিশি রাত জাগিয়া
তোর চোখে চোখ রাখিয়া
বইয়ের পাতায় নয় তোর চোখের পাতার শত কবিতা পড়বো।
অশ্রুজল
———-
তুমি কি পড়নি কখনো কোন
প্রেমের গল্প কবিতা হে’ বালিকা
শোনোনি কি বিরহ দহন চিৎকার
দেখনি প্রেমের হৃদয় ছেড়া যবনিকা
তবে কেন আনিআছো ফুল
কেন মোরে করিতেছ ব্যাকুল
ঢালিছো হৃদয়ে কোন প্রেম কণিকা
কি প্রেম ঢালিতেছ বিষের পেয়ালায় বল হে’ বালিকা।
প্রেমের গল্প কবিতা অমৃত
চৈতি হাওয়ায় হৃদয় দুলে বসন্ত আবৃত!
প্রথম প্রেম ফুলবৃক্ষের কদমের সুবাস
ফলবৃক্ষের জান্নাতি গন্ধম ফল –
শেষের পাতায় দেখেছি কেবল
বিরহ বেদনা অশ্রুজল।।